ইসরায়েলের সিরিয়া হামলা: জাতিসংঘ মহাসচিবের তীব্র উদ্বেগ
- By Jamini Roy --
- 13 December, 2024
সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের পর থেকে দেশটির সামরিক স্থাপনায় একের পর এক হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। গত মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) থেকে শুরু করে ৪৮ ঘণ্টায় সিরিয়ার ভূখণ্ডে প্রায় ৫০০ হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এসব হামলার কারণে অঞ্চলজুড়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস এই পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে ইসরায়েলকে অবিলম্বে হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।
টিআরটি ওয়ার্ল্ডের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ইসরায়েল ১৯৭৪ সালের চুক্তি লঙ্ঘন করে সিরিয়ার সীমান্ত বরাবর সেনা মোতায়েন করেছে। চুক্তিটি বাফার জোনে কোনো সামরিক উপস্থিতি নিষিদ্ধ করেছিল। ইসরায়েলের এই পদক্ষেপকে আঞ্চলিক অখণ্ডতার বড় লঙ্ঘন হিসেবে দেখছে আন্তর্জাতিক মহল।
জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিখ এক সংবাদ সম্মেলনে সিরিয়ায় ইসরায়েলের হামলার নিন্দা জানান। তিনি বলেন, “সিরিয়ার বিভিন্ন স্থানে শত শত বিমান হামলা নিয়ে মহাসচিব গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। তিনি দেশটিতে সহিংসতা কমানোর জরুরি প্রয়োজনের ওপর জোর দিয়েছেন।”
মহাসচিব ১৯৭৪ সালের চুক্তির প্রতি সম্মান জানাতে এবং বাফার জোনকে সামরিক কার্যক্রম থেকে মুক্ত রাখতে ইসরায়েলকে আহ্বান জানিয়েছেন।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) সিরিয়ার বিভিন্ন সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল:
- দামেস্ক, হোমস, লাতাকিয়া, টারতুস, এবং পালমাইরা: বিমানবিধ্বংসী ব্যাটারি, ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন, এবং ফাইটার জেট।
- অস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্র ও ডিপো: ট্যাঙ্ক, লঞ্চার, এবং অন্যান্য সামরিক কাঠামো।
- নৌ অবকাঠামো: ইসরায়েলি নৌবাহিনী সিরিয়ার দুটি নৌঘাঁটিতে হামলা চালায়, যেখানে ১৫টি নৌযান এবং সমুদ্র থেকে সমুদ্রে উৎক্ষেপণকারী ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করা হয়েছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেন, “সিরিয়ার নৌবাহিনীকেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।”
ইসরায়েলের এই হামলার বিরুদ্ধে ফ্রান্স, ইরান, মিশর, তুরস্কসহ বিভিন্ন দেশ তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তারা সিরিয়ার সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে কড়া প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে।
প্রায় তিন বছর ধরে চলমান সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের পরও দেশটির অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। এর মধ্যেই ইসরায়েলের এই ব্যাপক হামলা সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। আন্তর্জাতিক মহল এখন সিরিয়ার সার্বভৌমত্ব পুনরুদ্ধার এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানাচ্ছে।